বৈশ্বিক মহামারী করোনার পর এই প্রথম সৌদি আরবে হজ্বে দশ লাখ মানুষ ।ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কায় কোভিড-১৯ মহামারীর পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পুনরায় লাখ লাখ মানুষ পবিত্র হজ্ব পালনের জন্য একত্রিত হয়েছে।মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা গালফ নিউজ(Gulf News) জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর এই প্রথম সৌদি আরব সরকার পুনরায় তার দেশে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় দশ লাখ (১ মিলিয়ন) মানুষকে হজ্ব পালনের অনুমতি দিয়েছে। সৌদি সরকার হজ্ব পালনে আগত আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা জানাতে বিভিন্ন ব্যানার, স্কোয়ার এবং শহরের বিভিন্ন গলিতে ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করেছে। তাছাড়াও আগত অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি আরবের সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনী প্রাচীন শহর মক্কা এবং নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মস্থান মদিনায় বিশেষ টহল দিচ্ছে।
গালফ নিউজ আরও জানিয়েছে,আগামী বুধবার(৬ জুলাই) প্রত্যাশিত পবিত্র হজ্বের প্রধান অনুষ্ঠানশুরু হওয়ার আগে মক্কায় সুদানী তীর্থযাত্রী আবদেল কাদের খেদার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকেদেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটি এক নির্মল আনন্দ।” “আমি প্রায় বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি এখন এখানে(মক্কায়) আছি। আমি আলহামদুলিল্লাহ প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি।”সংবাদ সংস্থার খবরে আরও বলা হয়েছে এই বছর দশ লাখ হজ্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এবং বাকী দেড় লাখ সৌদি নাগরিক সহ এই দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা।
হজ্ব ইসলামের একটি মূল স্তম্ভ,যা সমস্ত সক্ষম দেহধারী মুসলমানদের কমপক্ষে জীবনে একবার সম্পাদন করতে হবে বলে ইসলামের নির্দেশ রয়েছে। তবে বৈশ্বিক মহামারীজনিত গত কারণে দুই বছর ধরে শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসরত সীমিত মুসলমানদের দিয়ে হজ্ব সম্পন্ন করা হয়েছে।সৌদি আরবের এক বিশ্বস্ত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে গালফ নিউজ আরও জানিয়েছে,মক্কায় হজ্বের জন্য পরিকল্পিত ১০ লাখ মানুষের মধ্যে বর্তমানে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫০,০০০ বিদেশী হজযাত্রী সৌদি আরবে এসে পৌঁছেছেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ।পবিত্র হজ্ব পালন করেছিলেন। এই হজ্বের আচার ।অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কাবাকে প্রদক্ষিণ করা, মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের কালো পাথরে চুমু খাওয়া,জিলহজ্ব
মাসের ৯ তারিখ শুক্রবার আরাফাত ময়দানে সমবেত
হয়ে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং মিনায় “শয়তানকে পাথর মারা” ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকতা করতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে,বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের
প্রাদুর্ভাবের জন্য ২০২০ ও ২০২১ সালের হজ্বে বিদেশীদের প্রবেশে বা হজ্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল।২০২০ সালে হজ্ব পালন করেছিলেন সৌদি আরবের ভিতর বসবাসকারী প্রায় ১০,০০০ হাজার মানুষ। আর।২০২১ সালের হজ্বকে একটি বিশ্বব্যাপী সুপার- স্প্রেডারে পরিণত হওয়া বন্ধ করতে শুধুমাত্র ৬০,০০০
হাজার মানুষকে যারা সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত সৌদি নাগরিক এবং সেতুতে বৈধভাবে বসবাসকারী প্রবাসীরা।
অবশ্য এই বছর ৬৫ বছরের কম বয়সী এক মিলিয়ন
(দশ লাখ) টিকাপ্রাপ্ত তীর্থযাত্রীরা কঠোর স্যানিটারি শর্তে হজ্বে যোগদান করবেন, ইসলামের পবিত্রতম স্থান গ্র্যান্ড মসজিদ, দিনে ১০ বার স্ক্রাব করা এবং জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে সঙ্গীহীন নারীদের হজ্ব:হজ্ব, যার খরচ জনপ্রতি কমপক্ষে $৫,০০০ হাজার ডলার। হজ্ব ও ওমরা হজ্ব থেকেই সৌদি আরব বছরে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার আয় করে থাকে। সৌদি আরব
এই বছর থেকে নারীদের কোনো পুরুষ আত্মীয় ছাড়াই হজ্বে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে, যা গত বছর বাদ দেওয়া হয়েছিল।
‘প্রশান্তি’
সৌদি আরবের বেশিরভাগ ঘেরা জায়গায় মুখোশ পড়া আর বাধ্যতামূলক নয় তবে গ্র্যান্ড মসজিদে সেগুলি বাধ্যতামূলক হবে। বিদেশ থেকে তীর্থযাত্রীদের একটি নেতিবাচক PCR পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে হবে।হজ্ব চলাকালীন সময়ে গ্র্যান্ড মসজিদ “দিনে ১০ বার ধোয়া হবে… ৪,০০০ হাজারের উপরে পুরুষ ও মহিলা পরিচ্ছন্ন কর্মী দ্বারা এই কাজ সম্পাদন করা হবে।সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,পরিচ্ছন্নতার সময় প্রতিবার১ লাখ ৩০ হাজার লিটারেরও বেশী জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হবে”পবিত্র হজ্ব পালন করতে আসা মুসলমানদের সম্মিলিত ধ্বনিতে শীঘ্রই মুখরিত হয়ে উঠবে বিখ্যাত আরাফাতেরময়দান, লাব্বাইক আল্লাহ হুম্মা লাব্বাইক,লাব্বাইক আলা শারিকালাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি‘মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক;লা শারীকা লাক’.. অর্থ -হাজির!হে আল্লাহ হাজির,আপনার মহান দরবারে হাজির!আপনার কোনো শরীক নেই!সব প্রশংসা, নিয়ামত এবং সব রাজত্ব আপনারই!
তথ্যসূত্র:Gulf News ও AFP
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/৫জুলাই/জই