“ক্ষুধা” মাহ্ফুজুল আলম
আমিতো কখনও মিলিয়ে গাইনি
গায়েনের মত গান,
যে কথা কবির পদ্যে ছেঁপেছে
আমার গায়ের ঘ্রাণ।
আজ শুধু নয়, সেদিন হতে
বেড়েছিল সুদে ঋণ,
সুদ-কষে তা দিতেছি চলে
বেঁচে আছি যদ্দিন।
চোক্ষু ধারার ছাড়িয়ে যাওয়া
কিনবা মদ্য পান,
না দেখা ভ্রুনের চিৎকার করা
নষ্টের অপমান।
আমি সে চরম দুঃখি-!
তিমির আলোয় যবে না খোদা
দেখেনা ক্ষুধার রাত,
কেমন করে সে পিষ্ঠে চালায়
বড়লোকিদের হাত?
তবু কভু আমি বলিনা খোদা
হে দয়াময় রহমান,
বুক-মানিকেরে মাফ করো নিয়ে
সপি যদি মোর প্রাণ।
ছেলে যে ক্ষুধায় কাঁদে -!
ক্ষুধায় ক্লান্ত করে না আমারে
কত যে দিয়েছি মেপে,
ও কথা গুনে বলতে হবে না
ও পাড়ার ঘরে গিয়ে।
আকাশ ফাটিয়ে বলতে হলেও
দু’দানা ভাতের টানে,
ছেলেরে হারাতে চাইনা সেভাবে
যেভাবে হারি’ছি মাকে।
আমি অতি ভুকা এক বাবা -!
আমার পিষ্ঠে জোর যত আছে
তোর হাতে কিসে’ জ্বালা?
চামার বুকে কাঁদে না যেন
চালা-সে চাবুক চালা।
দিন শেষে যত বাংলা দামাল
মুখ উঁচু করি রয়,
তোদের পায়ে পিষ্ঠ হয়েও
দুঃখিদের খুব সয়।
তবুও দয়া যে কর -।
আমার বুকের মানিকের মুখে
ভাবলি ক্ষুধার পাপ?
সারা বাংলার হাজার বাপের
সম দারিদ্রের ছাপ।
তোমার মেয়েকে তুমি ভালোবাসো
আমার কমতি কিসে?
মা হারা মেয়েকে জলে মেরেছি
পাঁজড় গিয়েছে পিষে।
কন্ঠে ছিল সে তেজ!
বিধাতা বুঝি ঢের বুঝে গেছে
বাপেরে নিয়েছে ফের,
পথ্য অভাবে বাপ শুয়ে আছে
কবরে পেয়েছে টের।
তিন যুগ ধরে পিছে ফিরে দেখি
কত মায়া ভরা বুক,
বটবৃক্ষের ছাঁয়া নাই আজ
কোথা’ পাবো সেই মুখ?
কত দিন সবে শুনি।
আজকে যা কিছু দেখিছো তোমরা
অভুক্তদের দান,
বইয়ের পাতায় ছেঁপে উপহাস
আমাদেরই অপমান।
আমার বাছা না খেয়ে মরে
গরিবের ধন যত,
তোমাদের পায়ে লাথি খেয়ে তবে
কতজনা হলো গত।
আজি হলো সেই দিন।
দিনে দিনে যত ঋণ বেড়েছে
হয়না যদি সে মিছে,
যদি তা না পারো আমাদের নাম
বই হতে দাও মুছে।
তিমির রাত্রি শেষ করে আজ
প্রথম পূর্বাকাশ,
গলা চিৎকারে রক্তাবো আমি
যদি গলে দাও ফাঁস।।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২৭এপ্রিল/জই