কারা হেফাজতে বম যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিতকারা হেফাজতে লালত্লেং কিম বম হত্যার বিচার, আটক নিরপরাধ বম নারী ও শিশুদের মুক্তি এবং জুমচাষী এক খিয়াং নারী ধর্ষণ–হত্যার বিচারের দাবিতে আজ ১৭ মে (শনিবার) বিকেল ৩ টায়, শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বম ছাত্র জনতার আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন লালরিথাং বম ও সমাবেশ পরিচালনা করেন শিক্ষার্থী রবেন বম।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “পুলিশের হেফাজতে লালত্লেং কিম বমের মৃত্যুর ঘটনা সংশ্লিষ্ট আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। লালত্লেং কিম বমসহ নিরপরাধ বম জনগোষ্ঠীর মানুষ হত্যার জবাব চাই। আটককৃত নিরপরাধ বমদের মুক্তি চাই। সাধারণ বমদের হয়রানি বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কুকি-চীন ইস্যুতে পুরো বম জনগোষ্ঠীকে ভয়-ভীতি দেখানো বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ে দখল, উচ্ছেদ, হত্যা বন্ধ করতে হবে।”
রক্তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠবাদী উগ্রতা এবং মুসলিম জাতীয়তাবাদী জুলুম কর্তৃত্ব ও দাপটের সাধারণ শিকার হচ্ছেন অপরাপর বাংলাদেশী আদিবাসী জাতিসত্তার মানুষ, নারী, শ্রমিক ও ভিন্ন মতের মানুষ। উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর দাপট ও মিথ্যাচার, অপব্যাখ্যা, জাতি বিদ্বেষী ও নারী বিদ্বেষী আচরণ আমরা দেখছি।”
বক্তারা বলেন, “কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদ বর্বর নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে সেই জুলুমের ক্ষত এখনো শুকায় নাই। পতিত ফ্যাসিস্টের কালে যা যা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এখনও সেই ফ্যাসিস্ট মানসিকতা আমলাতন্ত্র, বিভিন্ন প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়ে গেছে, দায়িত্বশীল ও পদধারীদের মনন-মগজে রয়ে গেছে। এখনও জনগণকে নির্যাতন করা হচ্ছে।”
সভাপতির বক্তব্যে লালরিথাং বম বলেন, “কারা হেফাজতে লালত্লেং কিম বমের মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। এই মৃত্যুর জন্য রাষ্ট্র দায়ী। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। জুমচাষী একজন খিয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার চাই।তিনি আরও বলেন, “কেন বম শিশুদের গ্রেফতার করা হয়েছে? কেন নিরপরাধ বমদের জামিন না দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে? সরকারের কাছে জবাব চাই।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে আটক বম জনগোষ্ঠীর মুক্তি চাই। বম জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক জীবনে নিশ্চয়তা চাই। পাহাড় থেকে সমতল সকলের জীবনের নিরাপত্তা।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সাইদিয়া গুলরুখ, ইউল্যাবের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অলিউর সান, পিসিপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রূপসী চাকমা, লেখক-গবেষক পাভেল পার্থ, নারী সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য রেক্সোনা পারভীন সুমি, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা, ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সদস্য আবু রায়হান খান, ‘কথা বলো নারী’র আহ্বায়ক নুসরাত হক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল, ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাবি শাখার সভাপতি মোজাম্মেল হক, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাবি সংসদের সভাপতি মেঘমল্লার বসুসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন লেখক-নৃবিজ্ঞানী রেহমুমা আহমেদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, সংহতি জানিয়েছেন শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান।
Economist/24May/ZI/Politics