সৌন্দর্যের জলকন্যা খ্যাত ভেনিস শহর পৃথিবী বিখ্যাত একটি শহর।ইউরোপের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত ইতালি। দেশটির অন্যতম ভাসমান পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিত জলকন্যা খ্যাত ভেনিস। প্রতি বছর দেশ বিদেশের লাখো পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত থাকে ভেনিস নগরী। আর পর্যটকদের আগমনের কারণে এখানকার ব্যাবসা বাণিজ্য পর্যটক নির্ভর। প্রতি বছর পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনের।সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটকদের উপস্থিতি কমাতে ও পরিবেশ দূষণ রোধে ভেনিসের মেয়র আইন জারী করেছেন। ভেনিসে প্রবেশ করতে হলে দিতে হবে ৫ ইউরো প্রবেশ ফি। এই সিদ্ধান্তের কারণে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা।
জানা গেছে, গেলো ২৫ এপ্রিল ছিলো ইতালির ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস। সেই দিন থেকেই প্রবেশ ফি আদায় শুরু হয়েছে। ওয়েব সাইটের মাধ্যমে যে কোন অফিস বা তাবাক্কী (সিগারেটের দোকান) থেকে ভেনিসে ৫ ইউরো পরিশোধ করে ভেনিসে প্রবেশের কারণ ও নিজ তথ্যসহ পাসপ্রিন্ট করে প্রবেশ করতে হবে এ শহরে। অন্যথায় গুণতে হতে পারে জরিমানা।
এদিকে ভেনিস পাশ চালু করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যাবসায়ী নিপু জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর ভেনিসে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করায় পর্যটকের উপস্থিত কম হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যাবসায়ীসহ ইতালিয়ানদের বিক্রি কিছুটা কম হচ্ছে।
ভেনিস বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইতালির প্রধান উপদেষ্টা কলামিস্ট ও সাংবাদিক পলাশ রহমান জানান, ১৪ বছরের বেশি যাদের বয়স সেই সব পর্যটকদের এই পাস নিতে হবে। তবে ভেনিসের রেসিডেন্স কার্ড বা ভেনিসে যারা কাজ করেন তাদের একবার এই কার্ড তুললেই চলবে কোন প্রকার ফি ছাড়া। আর ভেনেতো বিভাগে যারা বসবাস করছেন, যাদের রেসিডেন্স কার্ড ভেনেতো বিভাগের মধ্যে তারা যতবার ভেনিসে আসবেন ততোদিন এই কার্ড তুলে ভেনিসে প্রবেশ করতে পারবেন কোন প্রকার ফি প্রদান ছাড়াই। তবে অন্য শহর হতে ভেনিসে ঘুরতে আসলে দিতে হবে ফি। এছাড়া যাদের হোটেল বুকিং করা থাকবে তাদের ভেনিস সিটি টেক্স পরিশোধ থাকার কারণে ৫ ইউরো দিতে হবে না।
ভেনিস পাসের জন্য গেলো ১৬ জানুয়ারি হতে পর্যটকদের জন্য অনলাইনে বুকিং শুরু করা হয়েছে। ২৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর করা ভেনিস পাসের নিয়ম চলে ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত। তবে ৫ মে থেকে পর্যটকদের শুধুমাত্র শনি ও রবিবার নিতে হবে ভেনিস পাস।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবি অনেক পর্যটক একদিনের জন্য ঘুরতে আসলে সাথে খাবার নিয়ে আসে ও অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া হলে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে রেখে যায়। যা কিনা পরিবেশ রক্ষায় হুমকি বয়ে আনে।
ভেনিস ও আশেপাশের শহরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের অভিমত মিউজিয়াম খ্যাত ভেনিসের ব্যাবসায়ীদের ব্যাবসা টিকিয়ে রাখতে ও পর্যটকদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভেনিস পাস নিতে যে সময় ব্যায় হয় তাতে অনেকেই বিরক্ত বোধ করেন।
ভেনিসে বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা ও ভেনিস বাংলা স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সারোয়ার বলেন, মিউজিয়াম ও জলকন্যা খ্যাত ভেনিসকে পুনরায় জমজমাট করতে মেয়রের সিদ্ধান্তকে শিথিল করে ভেনিস পাস উঠিয়ে নিলে পর্যটকদের পদচারনায় আবারও মুখরিত হয়ে উঠবে ভেনিস শহর।
bdnewseu/19May/ZI/Venice