ভিয়েনা রাজ্য প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ “শহীদ মিনার” নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।আবেদনপত্রটি গত ১২ ডিসেম্বর ভিয়েনার রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে।সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ২৩ নাম্বার ডিস্ট্রিক্টের জেলা পরিষদের ÖVP দলের কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান নয়ন ইউরো বাংলা টাইমসেরআন্তর্জাতিক সম্পাদক কবির আহমেদকে এতথ্য জানান। তিনি জানান,ভিয়েনায় বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণার্থে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ভিয়েনার ২৩ নাম্বার ডিস্ট্রিক্টে একটি উপযুক্ত স্থান প্রদান এবং অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়।
তিনি জানান, আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন ভিয়েনার
২৩ নাম্বার ডিস্ট্রিক্টের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্যাট্রিক গাসেলিক (ÖVP), ÖVP দলের জেলা ক্লাবের সভাপতি ফিলিপ স্ট্যাডলার এবং আমি জেলা পরিষদের কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান (ÖVP)।
তিনি আরও জানান, আবেদন পত্রটিতে ভিয়েনা শহরের (রাজ্য) দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে,অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায়, একটি শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ভিয়েনার ২৩ নাম্বার ডিস্ট্রিক্টে (Bezirk Liesing) বা জেলায় একটি উপযুক্ত স্থান সন্ধান করার জন্য এবং এর বাস্তবায়ন পরীক্ষা করার জন্য। এছাড়াও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ভিয়েনায় মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য
শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়,শহীদ মিনার একটি মহান প্রতীকী গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভ, যা প্রথমবারের নির্মিত হয়েছিল ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। যা বাংলা ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল।
এই স্মৃতিস্তম্ভটি বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার প্রশংসা এবং সুরক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে আসছে। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় লন্ডন, নিউইয়র্ক, টরন্টো এবং সিডনির মতো শহরগুলিতে ইতিমধ্যেই শহীদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে, যা কেবল স্মরণীয় স্থান নয়, মাতৃভাষার প্রতীক হিসাবেও ঊচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাতৃভাষার এই স্মৃতিস্তম্ভ বিশ্বায়িত বিশ্বে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ভাষাগত অন্তর্ভুক্তির জন্য আদর্শ হিসাবে উপস্থাপিত হচ্ছে।
মাহমুদুর রহমান নয়ন আরও বলেন, অস্ট্রিয়ার
রাজধানী ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস
ও স্থায়ী মিশনের সহায়তায় লিজিং জেলায় এই প্রকল্পটি চালানো সম্ভব। কর্তৃপক্ষ উপলব্ধি করতে জেলায় স্মৃতি স্তম্ভের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান প্রদান করতে পারে, যেখানে দূতাবাসের সাথে সহযোগিতায় প্রকল্পটির অর্থায়ন এবং বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
Liesing এ একটি শহীদ মিনার নির্মাণ হলে:
● ভিয়েনা বিশ্বের একটি অন্যতম ভাষাগত সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের শহর হিসেবে উপকৃত ও অবদান অব্যাহত রাখতে পারবে। তাছাড়াও পারস্পরিক সহনশীলতার শক্তিশালী বন্ধন তৈরি হবে।
● মাতৃভাষার জন্য নির্মিত শহীদ মিনারে কেন্দ্র করে ভিয়েনা বিভিন্ন শিক্ষামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে যা স্থানীয় ভাষা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে।
● এই শহীদ মিনার বিশ্বের শান্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক এবং বিভিন্ন দেশের মানুষকে এর স্মরণে যার যার নিজ মাতৃভাষার প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে।
আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই ভিয়েনার রাজ্য প্রশাসন
থেকে একটি পজিটিভ উত্তর আসবে।
Economist/16December/ZI/Vienna