রাজনীতি-ক্ষমতার জন্য নয়, ফাঁসিতে ঝুলতে শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে হবে।টেকনাফে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে-মুহাম্মদ শাহজাহান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্যমুক্ত ব্যতিক্রমধর্মী বাংলাদেশ গড়তে হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে আয়োজন করতে হবে। পুরাতন ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে বাংলাদেশ থেকে বৈষম্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি ও কালো টাকার প্রভাব ঠেকানো যাবে না। তিনি সরকারকে একটি স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রণয়নের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, বিগত সাড়ে পনেরো বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে আমাদেরকে পরাধীন করার চক্রান্তে মেতে উঠেছিল। তরুণ প্রজন্ম সেটা বুঝতে পেরে নিজেদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে তারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে স্বাধীন করেছে। আমরা রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শুধুমাত্র চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য নয়, আমরা চাই সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর হোক।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের কোথাও মানবাধিকার বলতে কিছুই ছিল না। গুম-খুন, দমন-পীড়ন চালিয়ে বাকশালী শাসন ব্যবস্থা চালু করেছিল। যুদ্ধাপরাধের নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে তারা বাংলাদেশ থেকে মূলধারার ইসলামী রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কয়েকদিনের মাথায় আ’ লীগ শুধু নিষিদ্ধই নয় জনরোষের ভয়ে দলীয় প্রধান থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। যেটা আ’লীগের অপরাজনীতির ফল হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকবে। এখন শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেশে আসতে হবে। হাসিনা রাজনীতি করে ক্ষমতায় যেতে পারবে সেই সুযোগ বাংলার জনগণ দিবে না। নিজামী, মুজাহিদসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যেভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেই বিচারের মুখোমূখি হয়ে হাসিনাকে ফাঁসিতে অবশ্যই ঝুলতে হবে। দেশপ্রেমিক ৫৭ জন সেনাবাহিনীর অফিসার ও শাপলা চত্বরে গণ হত্যা এবং জামায়াত নেতাদের খুনের বিচার করতে হবে। ব্যাংক ডাকাত ও দেশের সম্পদ লুট করে যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি সকল ভেদাভেদ ভুলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশ গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

১১ জানুয়ারি (শনিবার) বিকাল ৩টায় টেকনাফ বাস স্টেশন চত্বরে পৌর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। টেকনাফ পৌরসভা সভাপতি রবিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-জেলা জামায়াতের আমীর ও হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম, জেলা সমাজ কল্যাণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নূরুল হোসাইন ছিদ্দিকী, টেকনাফ উপজেলা আমীর মাওলানা মুহাম্মদ রফিকুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা ফোরকান আহমদ, এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী সরওয়ার কামাল সিকদার, টেকনাফ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মুহাম্মদ ইসমাঈল, উপজেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন নিজামী, উপজেলা ওলামা বিভাগের সেক্রেটারী মাওলানা আবদুস সোবহান, সাবরাং ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ জুবায়ের, উপজেলা জামায়াতের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, টেকনাফ সদর জামায়াতের সভাপতি নাছির উদ্দিন, বাহারছড়া ইউনিয়নের সভাপতি মাওলানা মোস্তাক আহমদ, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি জায়নত উল্লাহ, শহিদুল ইসলাম মেম্বার, উপজেলা যুব বিভাগের সেক্রেটারী জাহাঙ্গীর আলম, জামায়াত নেতা বদিউল আলম, এডভোকেট আব্দুল আমীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি তারেকুর রহমান, সাবরাং ইউনিয়ন জামায়াত নেতা মুহাম্মদ সেলিম সিআইপি মেম্বার।

কর্মী সম্মেলনে পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।

Economist/11January/ZI/Politics