২০২৫ সালের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে গত বছর টেস্ট ক্রিকেট দেখেছে জমজমাট সব লড়াই। তাতে আলো ছড়িয়েছেন শীর্ষ খেলোয়াড়রা। তাদের মধ্য থেকে বর্ষসেরা একাদশ বেছে নিয়েছে আইসিসি, যেখানে প্রাধান্য ভারত ও ইংল্যান্ডের। আর বিস্ময়করভাবে টেস্ট চ্যাম্পি য়ন শিপের ফাইনালে জায়গা করে দক্ষিণ আফ্রিকার কাউকেই রাখা হয়নি।
শুক্রবার ঘোষিত এই দলে আরও নেই পাকিস্তানকে সিরিজ হারানো ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করা বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড়ও। এছাড়াও বাদ পড়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আরেক দল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি রাখা হয়েছে মাত্র একজন। দুর্দান্ত একটি বছর কাটানো অজি কাপ্তানকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই একাদশের অধিনায়ক হিসেবেও।
বর্ষসেরা টেস্ট একাদশ :
ইয়াশাশভি জয়সওয়াল (ভারত)
ইয়াশাশভি জয়সওয়াল ২০২৪ সালে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপে নিজেকে টেস্ট ওপেনার অসাধারণভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে চ্যালেঞ্জিং এক সিরিজের পরে তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন করেন। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাঁহাতি এই ব্যাটার দুটি ডাবল সেঞ্চুরিতে করেন ৭১২ রান। সব মিলিয়ে ৫৪.৫৪ গড়ে ২০২৪ সালে ১ হাজার ৪৭৮ রান আসে তরুণ এই ওপেনারের ব্যাট থেকে, যা গত বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বেন ডাকেট (ইংল্যান্ড)
২০২৪ সালে ইংল্যান্ডের টেস্ট সাফল্যে ওপেনাররা রাখেন বড় ভূমিকা। আর সেখানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন বেন ডাকেট। ৩৭.০৬ গড়ে ১ হাজার ১৪৯ নিয়ে বছর শেষ করেন এই ইংলিশ ব্যাটার।
কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
চোটের কারণে গত বছরে অনেকগুলো ম্যাচ মিস করলেও নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটার কেন উইলিয়ামসন তার ক্লাস প্রদর্শন করতে ভুল করেননি আরও একবার। সামগ্রিকভাবে, ২০২৪ সালে ৫৯.৫৮ গড়ে ১ হাজার ১৩ রান করেন কেন, যা ছিল ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান।
জো রুট (ইংল্যান্ড)
জো রুট ২০২৪ সালেও এই ফরম্যাটে তার আধিপত্য বজায় রাখেন, যা তাকে বছরের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে স্ট্যাটাস নিয়ে গেছে আরও উঁচুতে। সব মিলিয়ে বছরে ৫৫.৫৭ গড়ে তার নামের পাশে রান ছিল ১ হাজার ৫৫৬।
হ্যারি ব্রুক (ইংল্যান্ড)
২০২৪ সালে হ্যারি ব্রুক নিজেকে ইংল্যান্ডের পরবর্তী ব্যাটিং সুপারস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ব্যক্তিগত কারণে ভারত সফরে পাঁচ ম্যাচ মিস না করলে আরও সমৃদ্ধ হত তার পরিসংখ্যান। এরপরও ৫৫ গড়ে করেন বছরের চতুর্থ সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ রান।
কামিন্দু মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার এই ব্যাটার বছরটা কাটিয়েছেন স্বপ্নের মত। ব্যাট হাতে তার অসাধারণ ধারাবাহিকতা দলটিকে এনে দিয়েছে দারুণ কিছু সাফল্য। সব মিলিয়ে ৭৪.৯২ গড়ে করেন ১ হাজার ৪৯ রান।
জেমি স্মিথ (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে বলা যায় ২০২৪ সালে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন জেমি স্মিথ। ৪২.৪৬ গড়ে ৬৩৭ রানের পাশাপাশি উইকেটের পেছনে ৩২টি ক্যাচের পাশাপাশি করেন একটি স্টাম্পিংও।
রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)
রবীন্দ্র জাদেজা ২০২৪ সালটা শুরু করেন অসামান্য স্কিল প্রদর্শনী দেখিয়ে। হায়দরাবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন ৮৯ রানও। ভারতের অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার গেল বছর ২৯.২৭ গড়ে ৫২৭ রান করার পাশাপাশি ২৪.২৯ গড়ে শিকার করেন ৪৮ উইকেটও।
প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক) (অস্ট্রেলিয়া)
প্যাট কামিন্সের হাত ধরে অস্ট্রেলিয়ান গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেন। তবে উল্লেখযোগ্য ছিল বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জয়, ৩-১ ব্যবধানে যেখানে জয়ের মাধ্যমে ১০ বছর পর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় দলটি। অজিদের সফলতায় কামিন্স শুধুমাত্র একজন অসামান্য নেতাই নন, ব্যাট ও বল উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
২০২৪ সালে ২৪.০২ গড়ে ৩৭ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি সময়ের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার ২৩.৫৩ গড়ে ৩০৬ রানও।
ম্যাট হেনরি (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের এই অভিজ্ঞ পেসার ২০২৪ সালে মাত্র ১৮.৫৮ গড়ে ৪৮ উইকেট নেন, যা বছরের সর্বাধিক উইকেট শিকারির তালিকায় সামগ্রিকভাবে তাকে রেখেছে চতুর্থ স্থানে।
জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)
সময়ের অন্যতম সেরা ভারত পেসার গত বছরেও ছিলেন আপন ছন্দে আলোময়। টেস্ট ক্রিকেটে ন্যূনতম ২০০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে ২০ গড়ের নিচে থাকা একমাত্র বোলার বুমরাহই।
২০২৪ সালে ডানহাতি এই পেসার বিস্ময়কয়র ১৪.৯২ গড়ে ৭১টি উইকেট নেন, যা ছিল সব বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
Economist/25January/ZI/Sports