• বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৯:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে দেশের পরিস্থিতি বিনষ্ট করছে কিছু গুষ্ঠি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্ত আগস্ট মাসে ঢাকা সফর আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঢাকায় তার্কিশ এয়ারলাইন্সে পাখির আঘাতে ইঞ্জিনে আগুন, জরুরী অবতরণ ফিল্ড মার্শাল হলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির নতুন পররাষ্ট্রসচিব হচ্ছেন আলম সিয়াম ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাক-ভারত যুদ্ধবিরতির সময়সীমা আবারও এক ধাপ বাড়লো আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম বিক্রয় চুক্তির স্বাক্ষর হয়েছে সৌদির সাথে সাম্প্রতিক পাক-ভারত সংঘাতে সামরিক কৌশলের বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেল পাকিস্তান

ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহতের আশঙ্কা

কবির আহমেদ কূটনীতিক প্রতিবেদক দ্য ইকোনমিস্ট নিউজ ডেক্স
আপডেট : বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলায়২৬ জন নিহতের আশঙ্কা – হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সৌদি আরব সফর সংক্ষি প্ত করে রাতেই দেশে ফিরে এসেছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা একটি জনপ্রিয় পাহা ড়ি পর্যটনকেন্দ্র পহেলগ্রামে ওই হামলা চালানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের তৎপরতা কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, পর্যটকদের ভিড় আবারও বেড়েছে।

তিনটি পৃথক নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ২০, ২৪ ও ২৬। তবে গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছিলেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।

এদিকে সৌদি আরব সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সফর সংক্ষিপ্ত করে রাতেই দেশে ফিরে এসেছেন। দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেই তিনি ভারতেরজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সাথে বৈঠক করেন।

ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী  পহেল  গাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার খবর পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কাশ্মীর যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন।

আমাদের সামনেই গুলি ছোড়া হয়েছে,’ ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। ‘প্রথমে মনে হয়েছিল কেউ আত শবাজি ফাটাচ্ছে। কিন্তু যখন চারপাশ থেকে চিৎকার শুনলাম, তখনই বুঝে ফেলি কী ঘটছে। আমরা দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচাই।’ আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘চার কিলোমিটার পর্যন্ত থামিনি… এখনো কাঁপছি।’

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, রাস্তার ধারে একটি তৃণ ভূমিতে এ হামলা চালানো হয়। এতে দুই বা তিনজন জঙ্গি অংশ নিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন জনৈক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি, তাই আমি বিস্তারিত বলছি না। তবে এটুকু স্পষ্ট, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগ রিকদের ওপর যত হামলা হয়েছে, তার মধ্যে এটি অনেক বড়।’

নিহতদের জাতীয়তা এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা
করা হচ্ছে সবাই ভারতীয় নাগরিক। এদিকে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামক একটি স্বল্পপরিচিত জঙ্গি সংগঠন এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, ৮৫ হাজারের বেশি ‘বহিরাগত’ জম্মু ও কাশ্মীরে বসতি স্থাপন করেছে, যা ‘জনসংখ্যাগত পরিব র্তন’ ঘটাচ্ছে।

তাদের ভাষ্য, ‘ফলস্বরূপ, অবৈধভাবে বসতি স্থাপন কারী দের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো হবে।’ রয়টার্স স্বাধী নভাবে এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। জম্মু ও কাশ্মীরের আঞ্চলিক সরকার রাজ্য বিধানসভায় জানি য়েছে, গত দুই বছরে ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা প্রায় ৮৪ হাজা র অ-স্থানীয়কে জম্মু ও কাশ্মীরে বস বাসের অনুমতি দেও য়া হয়েছে।

ঘটনার পর পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘এ নৃশংস ঘটনার পেছনে যারা আছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংকল্প দৃঢ় এবং তা আরও জোরদার হবে…।’

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, তিনি জরুরি নিরাপত্তা সভায় যোগ দিতে কাশ্মীরে যাচ্ছেন।হিমালয়ের এ অঞ্চলটি পুরোপুরি ভারত নিজেদের দাবি করলেও বাস্তবে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ১৯৮৯ সালে ভারতবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকেই   অঞ্চলটি জঙ্গি সহিংসতার ঝুঁকিতে আছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছর গুলোতে সহিংসতা কমেছে।

২০১৯ সালে ভারত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে—জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ। এ পরিবর্তনের ফলে বহিরাগতদের বসবাস ও জমি কেনার সুযোগ তৈরি হয়।

এ সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ দুটি পারমা ণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজ না ও সংঘাতের অন্যতম উৎস।কাশ্মীরে পর্যটকদের লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা বর্তমানে প্রায় বিরল। সর্বশেষ প্রাণ ঘাতী হামলাটি হয় ২০২৪ সালের জুনে। সে সময় হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস জঙ্গি হামলার শিকার হয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে নয়জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হন।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে, অতীতে অনেক বড় জঙ্গি হামলা ঘটে বিদেশি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভারত সফরের সময়, যাতে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি কাশ্মীরের দিকে আকৃষ্ট করা যায়।

মঙ্গলবারের হামলাটি ঘটে ঠিক এমন এক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতে চার দিনের একটি সফর শুরু করেছেন।

Economist/23April/ZI/Kashmir


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ