হস্তান্তরের দেড় মাসেও চালু হয়নি ভোলার আইসিইউ বেড
হস্তান্তরের প্রায় দেড় মাসেও চালু করা সম্ভব হয়নি ভোলার তিনটি আইসিইউ বেড। করোনা মহামারির প্রথম দিকে দেশের এক মাত্র নদী বেষ্টিত জেলা ভোলার ২২ লাখ মানুষে জন্য আইসিইউ বেড স্থাপনের দাবি ওঠে। দাবির প্রেক্ষিতে ভোলার স্বাস্থ্য বিভাগ নবনির্মিত ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জন্য ১০টি আইসিইউ বেডের চাহিদা পাঠায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
দীর্ঘ এক বছর অপেক্ষার পর গত মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ভোলায় পাঁচটি আইসিইউ বেড, পাঁচটি ভেন্টিলেটর ও পাঁচটি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা বরাদ্দ দেয়। এর আলোকে গত ১৮ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার (সিএমএসডি) থেকে তিনটি আইসিইউ বেড, তিনটি ভেন্টিলেটর ও তিনটি হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলা ভোলার স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট হস্তান্তর করে। ভোলায় আইসিইউ বেড আসার খবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ভোলার মানুষ। কিন্তু ভোলায় আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর চালানোর দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় এগুলো কোনো কাজে আসছে না ভোলার মানুষের জন্য। এখনও করোনা আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রোগীর অবস্থা বেশী গুরুতর হলে আইসিইউ সাপোর্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। আর ভোলা থেকে ফেরী পাড় হয়ে ঢাকায় যেতে প্রায় ৮ থেকে ১২ ঘন্টা সময় লেগে যায়। অনেক সময় ঢাকায় নেয়ার পথেই রোগী মারা যায়। এ অবস্থায় নদী বেষ্টিত এ জেলার মানুষের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত আইসিইউ বেড চালানোর ডাক্তার ও নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবলের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। ভোলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আঁচিয়া বেগম বলেন, ভোলা সদর হাসপাতালে আইসিউ চালোকরা অতি জরুরি হয়ে পরেছে। হাসপাতালে এমন কিছু কিছু করোনার রুগী আসে যারা এতোটাই অক্সিজেন নির্ভরশীল হয়ে যায় তাদেরকে আমাদের যেই মেশিনারিজ আছে অক্সিজেন দিতে পারি তা অনেক সময় কাভারেজ করতে পারি না। কিছু রোগী আছে অকসিজেন লাঞ্ছকরছে কিন্তু কেরি করতে পারে না তাদের যদি আমারা কৃত্রিম ভাবে মেশিনের মাধ্যমে শ্বাসপ্রশ্বাস দিতে পারি তবে তার উন্নতি হবে। আর এই কাজ গুলো একমাএ আইসিইউতেই সম্ভব জেনারেল ওয়ার্ডে নয়।
ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো: সিরাজ উদ্দিন বলেন, গত ২০ এপ্রিল তিনটি আইসিইউ বেড, তিনটি ভেন্টিলেটর ও তিনটি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা আসার পর আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এগুলো স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ অন্যান্য জনবলের চাহিদা পাঠিয়েছি। তারা আমাদেরকে বলেছে সারা দেশেই জনবল সংকট। তাই কোনো ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান দেয়া সম্ভব না। এগুলো স্থানীয়ভাবে স্থাপন করতে হবে। এবং পরিচালনার জন্য বরিশাল বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে ভোলা থেকে ডাক্তার ও নার্সদের ট্রেনিং করিয়ে আনতে। পরে আমরা আমাদের টেকনিশিয়ান দিয়ে বিভিন্ন যায়গায় যোগাযোগ করে কিছুদিন আগে তিনটি আইসিইউ বেড স্থাপন করেছি। তবে এগুলো চালানোর জন্য সার্বক্ষণিক কমপক্ষে তিন জন ডাক্তার ও তিন জন নার্স দরকার। কিন্তু আমাদের কাছে অভিজ্ঞত নার্স ও ডাক্তার না থাকায় এগুলো চালানো যাচ্ছে না। আমরা বরিশাল খবর নিয়েছি। সেখানেও আইসিইউ চালানোর লোক নেই। তারা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে গুরুতর রোগীদের সেবা দেয়। যেটি আমরা আরও আগ থেকেই পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছি। সর্বশেষ আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এক জন এনেসথেসিওলজিস্ট চাইলে মন্ত্রনালয় আমাদেরকে এক জন। এনেসথেসিওলজিস্ট দেয়ার কথা বলেছে। সেটিও এখন পর্যন্ত কোনো খবর নেই।
ভোলা সিভিল সার্জন ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে ভোলা সদর হাসপাতালে জন্য তিনটি আইসিইউ বেড পেয়েছি বেড তিনটি ইনস্টল করা হয়েছে। আইসিইউ বেডের সাথে সম্পৃক্ত মনিটর, ট্রেনিংসহ অন্যান যা কিছু প্রয়োজন তা আমরা এখনো সম্পন্ন হয়নি বিদায় আমরা আইসিইউ শুরু করতে পারিনি। এটা জন্য আমরা সিএমএইজডিতে যোগাযোগ করেছি তারা বলেছে চলমান লকডাউনের পরে তাদের ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়ে মনিটর সংযোগ, মেনুয়াল ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। আমরা আশা করি লকডাউন উঠেগেলে ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার আসলে আমাদের আইসিইউর সমস্যার সমাধান হবে।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/৩১মে/জই