• শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জীবন রক্ষার্থে কতিপয় ব্যক্তিবর্গ কে মানবিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল: আইএসপিআর সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে দেশের পরিস্থিতি বিনষ্ট করছে কিছু গুষ্ঠি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্ত আগস্ট মাসে ঢাকা সফর আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঢাকায় তার্কিশ এয়ারলাইন্সে পাখির আঘাতে ইঞ্জিনে আগুন, জরুরী অবতরণ ফিল্ড মার্শাল হলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির নতুন পররাষ্ট্রসচিব হচ্ছেন আলম সিয়াম ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাক-ভারত যুদ্ধবিরতির সময়সীমা আবারও এক ধাপ বাড়লো আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম বিক্রয় চুক্তির স্বাক্ষর হয়েছে সৌদির সাথে

ধনবাড়ীতে কপি কেজি ৩ টাকা, বাজারের শোভা বাড়ালেও কৃষকের মাথায় হাত

জহিরুল ইসলাম মিলন , (টাঙ্গাইল ) ধনবাড়ি
আপডেট : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫

ধনবাড়ীতে কপি কেজি ৩ টাকা, বাজারের শোভা বাড়ালেও কৃষকের মাথায় হাত।টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে ফুলকপি নিয়ে বড় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতে প্রতিটি ফুলকপি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে তা নেমে এসেছে মাত্র ২-৩ টাকায়। চাষিদের দাবি, তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে কৃষি খাত নিয়ে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ কমে যাবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে বাজারে ফুলকপির সরবরাহ বেড়ে গেছে। এতে করে চাষিরা তাদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না। অনেক চাষি বাধ্য হয়ে লোকসানের মধ্যেই ফুলকপি বিক্রি করছেন।

ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এ বছর ধনবাড়ীতে প্রায় ৪ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। এই জমি থেকে ফুলকপির বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। রোগবালাই কম থাকায় ফলন ভালো হলেও অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে দাম কমে গেছে।

ধনবাড়ী উপজেলার কেন্দুয়া – ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ধনবাড়ী চৌরাস্তা মোড় প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত বসে অস্থায়ী পাইকারি সবজির বাজার। এই বাজারে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার ফুলকপি কেনাবেচা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, দিনের প্রথম প্রহরেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ফুলকপি নিয়ে আসা চাষিদের ভিড়। বাজারে সাদা, টাটকা ফুলকপির স্তূপ জমেছে। চাষিরা ভ্যানে করে ক্রেতাদের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন। কিন্তু দাম নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র হতাশা স্পষ্ট। দাম এতটাই কমে গেছে যে, কৃষকেরা বাধ্য হয়ে উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে ফুলকপি বিক্রি করছেন। আর অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও দাম কমিয়ে দিয়েছেন।
চাষি হামিদ উদ্দিন বলেন, ‘আজ ১০০টা কপি এনেছি। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বলছেন মাত্র ২ টাকা। অনেক দামাদামির পর বাধ্য হয়ে আড়াই টাকায় বিক্রি করেছি। ভালো দামের আশায় ভোরে হাটে এসেছিলাম। কিন্তু ভ্যানভাড়াও উঠল না।

আলমগীর হোসেন নামের আরেক চাষি বলেন, এখন দাম এতটাই কম যে, উৎপাদন খরচই উঠছে না। মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম পেলেও এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে। এত কষ্ট করে চাষ করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সরবরাহ এত বেশি যে, তাঁরা সব কপি কিনতে পারছেন না। ব্যবসায়ী কুদ্দুস আলী বলেন, ‘আমরা সারা জেলায় কপি সরবরাহ করি। তবে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ থাকায় দাম কম। চাষিদের জন্য বিষয়টি কষ্টের।

কেন্দুয়া গ্রামের চাষি জালাল বলেন, ‘আমি আমজর জমিতে যে ফুলকপির আবাদ করেছি। প্রতিটি কপিতে ৭- ৪টাকা খরচ হইছে। অথচ বাজারে বেচতে গিয়া দাম ২-৪ টাকা। আমাদের তো পুরাই লস হচ্ছে।’
ধনবাড়ী উপজেলা
কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, একসঙ্গে একই ধরনের চাষাবাদের পরিবর্তে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ করা উচিত। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে হবে।
শুরুতে ভালো দামে ফুলকপি বিক্রি হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হয়েছিলেন। তবে একসঙ্গে বেশি ফুলকপি আবাদ করায় সরবরাহ বেড়ে গেছে এবং দাম কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, তারা যেন বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন। এতে বাজারে ভারসাম্য আসবে এবং কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন।’

প্রান্তিক কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,বীজ,সার,কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ গত বছরের তোলনায় অনেকটাই বেড়েছে।প্রতি পিচ ফুলকপি উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ টাকা। মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকেরা তাদের পুজি হারাবার আশংকায়।

Economist/21January/ZI/donbari


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ