• শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জীবন রক্ষার্থে কতিপয় ব্যক্তিবর্গ কে মানবিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল: আইএসপিআর সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে দেশের পরিস্থিতি বিনষ্ট করছে কিছু গুষ্ঠি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্ত আগস্ট মাসে ঢাকা সফর আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঢাকায় তার্কিশ এয়ারলাইন্সে পাখির আঘাতে ইঞ্জিনে আগুন, জরুরী অবতরণ ফিল্ড মার্শাল হলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির নতুন পররাষ্ট্রসচিব হচ্ছেন আলম সিয়াম ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাক-ভারত যুদ্ধবিরতির সময়সীমা আবারও এক ধাপ বাড়লো আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম বিক্রয় চুক্তির স্বাক্ষর হয়েছে সৌদির সাথে

ইতালিতে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ভয়াল ছোবল অব্যাহত! হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেছে

কবির আহমেদ কূটনীতিক প্রতিবেদক ভিয়েনা
আপডেট : রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০

ইতালিতে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ভয়াল ছোবল অব্যাহত! হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে গেছে! বর্তমানে সমগ্র ইতালিতে কয়েক শতাধিক বাংলাদেশী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং গত কয়েকদিনে একাধিক প্রবাসী করোনায় মৃত্যুবরণ করেন।

ইতালির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী দক্ষিণ ইতালীর শহর নেপলস এবং আশেপাশের ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। এই অঞ্চলের হাসপাতাল সমূহ করোনার রোগীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় রোগীদের গাড়ির মধ্যে রেখে চিকিৎসা করতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবের্তো স্পারাঞ্জা বলেছেন, “আগামী এক মাসে ইতালিতে করোনা নিয়ন্ত্রন সহজ হবে না৷ এ মূহূর্তে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনই একমাত্র আশার আলো দেখাচ্ছে৷ তাই ভ্যাকসিন আসা পর্যন্ত সবাইকে সাবধান থাকতে হবে এবং বিধি-নিষেধ গুলি যথাযথ মেনে চলতে হবে৷ নতুবা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে৷ বর্তমানে মানুষের মধ্যে যে হতাশা ও অবিশ্বাস রয়েছে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হলে তা দুর হয়ে যাবে৷” সবাই সতর্কতা ও সচেতনতা অবলম্বন করুন । নিজে নিরাপদে থাকুন এবং অন্যকে নিরাপদে রাখুন।

“ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি ডি মাইও। তিনি ইতালির দৈনিক লা স্ট্যাম্পাকে এই তথ্য জানিয়ে বলেন, আমাদের করোনার বিধিনিষেধ যথাযথভাবে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। লোকজনের বিধিনিষেধ যথাযথ না মানার কারনে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে এবং এর ফলে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।ইতালির ইংরেজী এক অনলাইন পোর্টাল দি লোকাল ইতালি জানায়, নেপলসের কোটুগনো হাসপাতালের বাইরে, চিকিত্সকরা জনাকীর্ণ জরুরি কক্ষের বাইরে গাড়িতে পার্ক করা লোকদের চিকিত্সার জন্য অক্সিজেন ট্যাঙ্ক নিয়ে এসেছিলেন। আর যারা এম্বুলেন্সে করে এসেছেন তাদের এম্বুলেন্সে রেখেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ইতালির সরকার ঘনঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছে তবুও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে ৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুসারে, সরকার নতুন লাল এবং কমলা অঞ্চলের সংখ্যা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় কাম্পানিয়া ও তুসকানা অঞ্চল দুটিকে ইতিমধ্যে সংক্রামনের সর্বোচ্চ ঝুঁকিযুক্ত অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমলা অঞ্চলের তালিকাটিও প্রসারিত করা হবে, তবে এর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরঞ্জার স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। নতুন লাল অঞ্চলগুলির তালিকা(৭টি):- Calabria, Campania, Lombardia, Piemonte, Provincia di Bolzano, Toscana এবং Val d’Aosta. নতুন কমলা অঞ্চলগুলির তালিকা(৯টি):- Abruzzo, Basilicata, Liguria, Puglia, Sicilia, Umbria এবং নতুন যোগ হবে Emilia-Romagna, Friuli Venezia Giulia e Marche. হলুদ অঞ্চলগুলির তালিকা(৫টি):- Lazio, Molise, Trento, Sardegna এবং Veneto. যেসব অঞ্চল গুলো লাল ও কমলা জোনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে সে অঞ্চল গুলোর জন্য নুতুন বিধি-নিষেধ আগামী ১৫ই নভেম্বর রবিবার থেকে কার্যকর হবে৷
এদিকে ইতালির বিভিন্ন শহরের বাংলা অনলাইন পত্রিকার খবর অনুযায়ী করোনার এই দ্বিতীয় তরঙ্গে কয়েক শতাধিক বাংলাদেশী প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সংবাদ অনুযায়ী গত কয়েকদিনে একাধিক প্রবাসীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে। ইতালির বাংলা অনলাইন পোর্টাল এবং অনেক প্রবাসীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে রাজধানী রোম,ভেনিস এবং মিলান সহ প্রায় সমগ্র ইতালিতেই করোনায় আক্রান্ত বাংলাদেশীদের ১৪ দিনের জন্য নিজ বাসায় আইসোলেশনে থাকতে বললেও অনেকেই তা মানছেন না। ফলে বাংলাদেশী কমিউনিটির লোকজনের মধ্যে সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ইতালির বাংলা পত্রিকা সমূহ প্রবাসীদের করোনার বিধি-নিষেধ সঠিকভাবে মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছেন।আরও বলেছেন আপনারা কেন জেনে শুনে আরেক জনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। আসলে ব্যাপারটা হল,করোনায় পজিটিভ হলেও কোন উপসর্গ না থাকায় অনেকেই ভাবছেন আমি বাহিরে গেলে কোন অসুবিধা নাই। কিন্ত তারা বুঝতে পারছে না তাদের শ্বাস প্রশ্বাসের এক মিটারের মধ্যে অন্যকোন দুর্বল ব্যক্তি সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করতে পারে!

শনিবার ১৪ নভেম্বর ইতালিতে একদিনেই আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ৩৭,২৫৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৪৪ জন। ইতালিতে এই পর্যন্ত করোনার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১,৪৪,৫৫৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৪,৬৭৩ জন। করোনার থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন ৪,১১,৪৩৪ জন।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৫ নভেম্বর/ জহিরুল ইসলাম


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ